ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক আপনাদের অনেকের হয়তো জানা নেই ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়।তাই আজকে আমি আপনাদের ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।আপনার ও যদি জানার ইচ্ছে থাকে তাহলে আমার এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।চলুন বিস্তারিত জানা যাক ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়।আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আরো জানতে পারবেন ইশরাকের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে। তাই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

সূচিপত্রঃইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় বিস্তারিত জানুন

ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়

আমাদের অনেকের জানা নেই ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়।তাই আমি আজকে আপনাদের জানাবো ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যদি কোন আল্লাহ পাকের বান্দা অথবা বান্দি ফজরের নামাজের পরে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত সেই জায়গার মধ্যে বসে তাসবি তাহলিন জিকির কোরআন তেলোয়াত এর মধ্যে ব্যস্ত থাকে তারপর সূর্য ওঠার ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে দুই রাকাত ইশরাকের নামাজ আদায় করলে।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার আমল নামার মধ্যে একটি পূর্ণ বড় হজের সোওয়াব তার আমলনামার মধ্যে লিখিবেন সুবহানআল্লাহ। ইশরাকের নামাজ সব সূরা দিয়ে পড়া যায়। যেমন প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন একটি সূরা পড়লেই হবে। এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সাথে আর একটা সূরা পড়লে হবে।আশা করছি আপনি ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় তা জেনে গেছেন।

ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম

তিরমিজি শরীফে ৫৮৬ নম্বর হাদিস হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের সালাত আদায় করবে এবং যথা স্থানে বসে থাকবে সূর্য পরিপূর্ণ উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত সময় সাথে সাথে আল্লাহর জিকির করতে থাকবে তারপর দুই রাকাত ইশরাকের সালাত আদায় করবে তো তার নামে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সোওয়াব লিখে দিবেন সুবহানাল্লাহ।
এ কথাটি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার উচ্চারণ করেছেন। তাম্মাতি তাম্মাতি তাম্মা। পরিপূর্ণ ওমরার সোওয়াব পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সোওয়াব,পরিপূর্ণ হজ ও ওমরার সোয়াব লিখে দেওয়া হবে সুবহানাল্লাহ। দুই রাকাত সালাতুল ইশরাক আদায় করার কথা নবী সাঃ বলেছেন। তো ফজরের নামাজের পরে সূর্য যখন পরিপূর্ণ উদয় হয়ে যায় তখনই সালাতুল ইশরাক আদায় করতে হয়।

ইশরাকের নামাজের সময়

সাধারণত সূর্য উদয় হওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পর ইশরাকের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। এবং দ্বি-প্রহরের আগ পর্যন্ত এ নামাজ আদায় করা যায়। তবে ওয়াক্তের শুরুতেই ইশরাক নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম। প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে যে ইশরাক ও চাশত দুটি একই নামাজ। সূর্য উঠার পর একটু দেরি করে পড়লে সেটাকে চাশতের নামাজ এবং একটু আগে পড়লে সেটাকে ইশরাকের নামাজ বলা হয়। অর্থাৎ সূর্য উদয়ের পর পরই যদি আপনি নফল নামাজ পড়ে থাকেন তাহলে সেটা ইশরাকের নামাজ এবং সূর্য উদয়ের কিছুটা সময় পরে যদি আপনি এ নামাজ আদায় করেন তখন সেই নামাজ চাশতের নামাজ হয়ে যাবে।

ইশরাক নামাজের ফজিলত

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তালাকে স্মরণ এবং জিকির এ লিপ্ত থাকে অথবা সূর্য উঠার পরে দুই রাকাত বা চার রাকাত ইশরাকের নামাজ পরে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন জাহান্নামের আগুন তার শরীরের চামড়াকেও স্পর্শ করবে না সুবহানআল্লাহ।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার পর সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার স্মরণে জিকিরে লিপ্ত থাকে।অথবা সূর্য উঠার পর দুই রাকাত ইরাকের নামাজ পড়ে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আল্লাহ রব্বুল আলামিন এমন ব্যক্তিকে পরিপূর্ণ একটি হজ এবং একটি ওমরাও সোয়াব দান করবে সুবহানাল্লাহ।

ইশরাক নামাজ কত রাকাত

ইশরাকের নামাজ হল চার রাকাত। তবে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তিনি বর্ণনা করেন কোন ব্যক্তি যদি ফজরের নামাজ পড়ার পরে সূর্য উদয় পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর সে দুই রাকাত কিংবা চার রাকাত নামাজ আদায় করল তাকে জাহান্নামে আগুন স্পর্শ করতে পারবে না। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারলাম ইশরাকের নামাজ দুই রাকাত ও পড়া যাবে আবার চার রাকাতও পড়া যাবে। এটা আপনার ইচ্ছা। আপনি দুই রাকাত ও পড়তে পারবেন আবার চার রাকাতও পড়তে পারবেন এতে কোন সমস্যা হবে না।

ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ত

আজকে আমার এই আর্টিকেল এর মূল বিষয় হলো ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়।এবার আপনাকে জানাবো ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ত। প্রত্যেকটা নামাজ পড়ার জন্য আপনাকে নিয়ত করতে হবে। এখন নিয়ত মনে মনে পাঠ করা শর্ত তবে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা শর্ত নয়। আপনি যেকোনো কাজের জন্য যদি ইচ্ছা করেন তাহলে সেটি নিয়ত হয়ে যাবে। তেমনি ভাবে আপনি যদি কোন নামাজ পড়ার আগে যদি ইচ্ছা করেন।যেমন আপনি ফজরের নামাজের দুই রাকাত সুন্নতের ইচ্ছা করলেন।সেটি আপনার এই দুই রাকাত নামাজের জন্য নিয়ত হয়ে যাবে। ঠিক সে রকম ইশরাকের নামাজ পড়ার আগে যদি ইচ্ছা করেন দুই রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়বেন সেটি ইশরাকের নামাজের নিয়ত হয়ে যাবে। নামাজের জন্য নিয়ত মনে মনে বলা এবং মুখে সেটা উচ্চারণ করা মুস্তাহাব।

ইশরাকের নামাজ সুন্নত না নফল

আমাদের সমাজে সুন্নত নফল এর বিষয়টা খুব ঘোরালো। আমাদের প্রথমে যে বিষয়টা মনে রাখতে হবে যে ফরজ বাদে সকল এবাদতই নফল। ফরজ ছাড়া যত ইবাদত আছে হাদিস শরীফে এগুলোকে নফল বলা হয়েছে। এই নফলের আবার কিছু ক্যাটাগরি আছে। যে নফল রাসুল সাঃ নিয়মিত করতেন এগুলোকে আমরা সুন্নত নফল বলি। যেমন আপনি যোহরের পরে দুই রাকাত নামাজ পড়েন সুন্নত। আবার তারপরে আর দুই রাকাত নফল পড়ি।সবই নফল। একটা হল রসূল নিয়মিত পড়তেন কাজেই নফল টার ক্যাটাগরিটা একটু বাড়ছে। কাজেই যেকোনো সুন্নতকে আপনি নফল বলতে পারেন। যে কোন। ফরজ নয় এমন সবই নফল। নাফলের ভিতরে কিছু যেগুলো নিয়মিত করতেন সেগুলোকে আমরা সুন্নত বলি। কাজেই সুন্নত নফল এর পার্থক্যটা এত বেশি কিছু নয়।

ইশরাক ও চাশতের নামাজের সময়

ইশরাক এবং চাশ মূলত এক। হাদিসে দুই রকম নেই। আপনি বেলা উঠার ১৫-২০ মিনিট পর থেকে বেলা গড়ার আগ পর্যন্ত যেটা পড়বেন এটাকে সালাতুল দোহা বলা হয়। হাদিসে তাই বলা হয়েছে। তবে দুই পর্যায়ে সালাতুল দোহা আদায় করার কথা হাদিসে আসছে। একটা হল বেলা ওঠার কিছুক্ষণ পরে আরেকটা হল যখন রোদ উঠে নয়টা দশটার দিকে। যদি কেউ দুই রাকাত ইশরাক ও চাশতের নামাজ পড়ে আল্লাহতালা তাকে একটা পরিপূর্ণ হজ এবং একটা পরিপূর্ণ ওমরার সোয়াব দান করে।

শেষকথা-ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক আপনারা এতক্ষন পড়ছিলেন ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত।আমার আজকের এই পোস্ট টি আপনি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আশা করছি ইশরাকের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় অনেক ভালো মতো বুঝতে পারবেন।আমার এই ওয়েবসাইডে প্রতিদিন আপনাদের কাছে তথ্য প্রযুক্তি,লাইফ স্টাইল,শিক্ষা,স্বাস্থ,চিকিৎসা ও ইসলামিক বিষয় নিয়ে বাংলা পোস্ট লেখা হয়।
আমার এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারেন।আর প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইড ভিজিট করবেন।এতক্ষন আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment